ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ১৪ দিন পরও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
গত ১ ডিসেম্বর অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে উপজেলার ধোপাঘাট গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী শরিফ মিয়া (৩২) ও তাঁর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে।অপহৃত ওই ছাত্রীর বাড়িও ধোপাঘাট গ্রামে। সে ওই গ্রামের প্রবাসী খাইরুল ইসলামের মেয়ে ও স্থানীয় শিবগঞ্জ বি, দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী
মামলার এজাহার ও ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত কিছুদিন পূর্বে শরিফ মিয়া ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে তাতে কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়ের প্রস্তাবে অপহৃত ছাত্রীটির পরিবার রাজি না হওয়ায় অপহরনের হুমকি দেয়। ১ ডিসেম্বর ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে যায় অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে। পরে বাড়ি ফেরার পথে শরিফ ও তাঁর লোকজন ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজনের কাছে পরিবার জানতে পারে, ওই ছাত্রীকে শরিফ ও তাঁর লোকজন একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছেন। টানা চার দিন স্থানীয়ভাবে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ৪ ডিসেম্বর ওই স্কুলছাত্রীর মা সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় একটি মামলা করেন। মামলার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি।
ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে খুবই ছোট। মাত্র সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলে যাতায়াতে বখাটে শরিফের উত্ত্যক্তের কথা প্রায়ই সে আমাকে বলত। পরে একদিন আমার এক দেবর ওই বখাটেকে নিষেধও করেছিলেন। কিন্তু ওই বখাটে তা–ও বিরক্ত করতেন। পরে বিয়ের প্রস্তাবও পাঠালে আমারা বিয়ে দেবনা বলে সাফ জানিয়ে দিলে সে মোবাইলে অপহরণের হুমকি দেয় কিন্তু মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে, আমরা এটা বুঝতে পারেনি। অপহরণের চার দিন পর্যন্ত ওই বখাটের আত্মীয়স্বজনের কাছে কতই না অনুরোধ করেছি আমার মেয়েটাকে দিয়ে দিতে। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। মেয়েটা এখন কী অবস্থায় আছে, সেটাও আমরা জানি না। পরে বাধ্য হয়ে থানায় মামলা করেছি। কিন্তু পুলিশ এখনো আমার মেয়েটাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েকে চাই। অপহরনকারীর পরিবার মামলা তুলে না নিলে নাকি মেয়েকে কোনো দিনও দেবে না।’
এ বিষয়ে জানতে শরিফের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা সবাই পলাতক রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকুল সরকার বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ওই ছাত্রীকে উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা যাবে।
দৈনিক বাংলা পত্রিকা / আতাউর রহমান মিন্টু
Facebook Comments