করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতির কারনে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর শনিবার সকাল থেকে রেল ষ্টেশনের কাউন্টারের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করলো বাংলাদেশ রেলওয়ে। বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস রোধে রেল মন্ত্রণালয় সব ধরনের ট্রেন চলাচল ও ট্রেনের টিকিট বন্ধ করে দেওয়ায় গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি বন্ধ ছিল ।
এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রির শুরুর দিনেই অধিকাংশ যাত্রী ট্রেনের টিকিট না পেয়ে রেল ভ্রমন করতে না পেরে ফিরে যায়। শনিবার সকালে গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনের কাউনাটারে গিয়ে দেখা যায়, দুইটি কাউন্টারের একটি বন্ধ। বাকী একটি কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের ভিড়। অধিকাংশ যাত্রী স্বাস্থবিিিধ মানছেন না। গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশনে আন্তনগর কিস্তা, ব্রহ্মপুত্র,অগ্নিবীণা, যমুনা, মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ষ্টপেজ আছে। ট্রেনের অধিকাংশ যাত্রী রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহগামী। গফরগাঁও খেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ভ্রমনের জন্য এ লাইনে চলাচলকারী আন্তঃনগর টেনগুলোর িিটকিট কাউন্টার থেকে ইস্যু করা হচ্ছে না। ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের তিনগুন দামে ১৪৫ কিংবা ১৫০ টাকা দিয়ে দেওয়ারগঞ্জ অথবা তারাকান্দির টিকেট ক্রয় করতে হচ্ছে। কাউন্টার খোলার ৩০/৩৫ মিনিটের মধ্যে ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেনগুলোর আজকের দিনের টিকিট শেষ হয়ে যায় । অনেক যাত্রীকে আসনযুক্ত অথবা আসনবিহীন টিকিটের জন্য কাউন্টারের সামনে ভিড় করতে দেখা যায়। প্রথমেই লাইনে দাঁিড়য়ে ট্রেনের টিকেট কাটতে পেরে সৌভাগ্যমান কিছু যাত্রী খুশি। উপজেলার ধাইরগাঁও ব্যবসায়ী সুমন মিয়া (৩৬) বলেন, কাউন্টারে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা চালু হওয়ায় সাধারন যাত্রীরা মহাখুশি। কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকেট প্রত্যাশি উপজেলার ভারইল গ্রামের হারুন অর রশিদ (২২), ঘাগড়া গ্রামের ইব্রহিম খলিল (২৮) টিকেট না পেয়ে হতাশ হয়ে বলেন, কাউন্টার থেকে আমরা যারা টিকেট ক্রয় করতে এসছিলাম তাদের শতকরা ৯০ ভাগই টিকেট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি ।
গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেমনের সহকারি বুকিং ক্লার্ক আহমেদ মুকিত স্বীকার করে বলেন, নির্ধারিত সময় সকাল আটটায় আমরা টিকিট বিক্রি শুরু করতে পারিনি। প্রথম দিনেই আসনবিহীন টিকেট ক্রয়ের জন্য যাত্রীদের অনেক ভীড় ও চাপ ছিল। নিয়ম না থাকায় আসনবিহীন টিকিট বিক্রি করা হয়নি।
গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার আব্দুল্লাহ আল হারুন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত। দায়িত্বে আছেন সহকারি ষ্টেশন মাষ্টার মোঃ জহিরুর ইসলাম।
মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ি এ ষ্টেশনের জন্য বরাদ্ধকৃত আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর আসনের শতকরা ২৫ ভাগ টিকিট আজ কাউন্টার থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে । এর মধ্যে আবার শতকারা ২ ভাগ টিকিট রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৃশৃংখলভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রির চেষ্টা করছি।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ি প্রতিটি ষ্টেশনের মোট আসন সংখ্যার ২৫ শতাংশ টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে এবং বাকি ২৫ শতাংশ টিকিট মোবাইল অ্যাপ, অনলাইনও মোবাইলে ইস্যু করা যাবে। করোনার কারনে বাকী ৫০ শতাংশ আসন খালি থাকবে। শতকরা ২৫ ভাগ হিসেবে কোন ষ্টেশনের টিকেট ৬টির কম হলে তা শুধু মোবাইল অ্যাপ, অনলাইন ও মোবাইলের মাধ্যমে ইস্যু করা যাবে।
দৈনিক বাংলা পত্রিকা / আতাউর রহমান মিন্টু
Facebook Comments