ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিখোঁজের চারদিন পর ধানক্ষেত থেকে স্বপন মিয়া (৪৩) নামে এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে । বুধবার দুপুর উপজেলার দিয়ারগাঁও গ্রামের বাইলনা বিল থেকে ওই কৃষকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পাগলা থানা পুলিশ। পাগলা থানা পুলিশ এ ঘটনায় নিহত স্বপন মিয়ার ভাই শহীদ মিয়াকে আটক করেছে।
পরিবারের সদস্যদের দাবী, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুর্বত্তরা তাকে অপহরনের পর হত্যা করে গভীর রাতে এখানে ফেলে রেখে যায় ।
পুলিশ, এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ২৭ শতাংশ জমি নিয়ে উস্থি ইউনিয়নের সান্জিব গ্রামের মন্তাজ মিয়ার ছেলে স্বপন মিয়ার সাথে বিরোধ ছিল তার সহোদর ছোট ভাই দিয়ারগাঁও গ্রামের শহীদ (৪২) ও সানজিব গ্রামের বাবুল(৩৯) ও তার লোকজনের সাথে। গত রবিবার সকালে স্বপন মিয়ার বাড়ির কাছে এ বিরোধ মিমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তোতা, স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়ার নেতৃত্বে এই সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । সালিশ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বিরোধপূর্ন ২৭ শতাংশ জমি পিতা মন্তাজ আলী (৮০) তার দুই ছেলে স্বপন ও শহীদকে সমান দুই ভাগে ভাগ করে দিবেন । আজ বুধবার এই বিষয়ে রেজেষ্ট্রি দলিল হওয়ার কথা ছিল। নিখোঁজের চারদিন পর বুধবার দুপুরেই স্বপন মিয়ার ক্ষত বিক্ষত লাশ ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়।
রবিবার দুপুরে সালিসর বৈঠক শেষ হওয়ার পর স্বপন মিয়া আর বাড়ি থেকে বের হননি। রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ির কাছের ছোট বাজার পাঁচবাগ মোড়ে গিয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরে রাত গভীর হওয়ায় বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁিজ করে সন্ধান পাননি । সোমবার ও মঙ্গলবার স্বপন মিয়ার পরিবারের লোকজন তাদের সকল আত্ত¡ীয়-স্বজনের বাড়িতে তাকে খোঁজ করে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তোতাকে বিষয়টি অবহিত করে। এদিকে মঙ্গলবার সকালে বাবুলের ফিশারীরর পাশে বাইলন্যা বিলে স্বপন মিয়ার ক্ষত বিক্ষত লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পাগলা পুলিতে খবর দেন । দুপুরে পাগলা থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। নিহতের ছেলে আলমগীর (১৮) জানায়, রবিবার রাত ৮টার দিকে পাঁচবাগ মোড়ে একটি চা’য়ের দোকানে তার পিতাকে সর্বশেষ দেখতে পায় । এই দোকানের পাশেই শহীদ, বাবুল নাজিম উদ্দিনসহ(৩৬)সহ ১০/১২জন লোক সংঘবদ্ধভাবে দাড়িয়ে ছিল। নিহতের বড় ছেলে মোঃ রিপন মিয়া (২৫) সালিশ বৈঠকেই তার পিতাকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। নিহতের স্ত্রী মোঃ মিনারা খাতুন (৩৯) কাঁদতে কাঁদতে জানায় রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত শহীদের ঘরে ১০/১২ জন গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করছিল । বাজার থেকে আমার স্বামী বাড়ি আসার সময় অপহরন করে, খুন করে লাশ এখানে ফেলে রাখে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তোতা জানান, নিহত স্বপন মিয়ার সাথে তার ভাইদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সালিশ বৈঠক করে এ বিরোধ মিমাংসা করে দেওয়া হয়েছিল।
পাগলা থানার ওসি মোঃ শাহিনুজ্জামান খান বলেন, এ ঘটনায় স্বপন মিয়ার শহীদ মিয়াকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Facebook Comments