সাবরিনা সুলতানা নূরার স্বপ্ন ছিল একজন চিকিৎসক হয়ে দেশ সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবে। বাবা, মা ও শিক্ষকদের সহায়তায় সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিল। পড়ালেখার প্রতিটি ধাপে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছিল নূরা । সবশেষ সফলতার দ্যূতি ছড়িয়েছে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে । ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী নূরা জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের পর নূরার বন্ধু ও সহপাঠীরা আনন্দ উল্লাস করলেও নূরার স্বজনদের মধ্যে নেই তার ছিটেফোঁটাও। কারণ এই উৎসবের মধ্যমণি নূরা যে আর নেই। তাই এ ফলাফল এখন বাড়িয়েছে শুধুই আক্ষেপ
গত ২২ এপ্রিল রাতে গাজীপুরের শ্রীপুরের আবদার গ্রামে নিজ বাড়িতে মা, বোন ও ভাইয়ের সঙ্গে হত্যার শিকার হন সাবরিনা সুলতানা নূরা। এ ঘটনায় একটি পরিবারের সঙ্গে নূরার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়।
পরিবারটির বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য নূরার বাবা রেজোয়ান কাজলের ভাষ্য অনুযায়ী, নূরা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। সে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। নূরা স্থানীয় এইচ একে একাডেমী নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছিল। পরীক্ষার পরই নূরা আত্মবিশ্বাসী ছিল ভালো ফলাফলের।
যারা তার মেয়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে তাদের বিচার দেখার অপেক্ষায় দিন কাটছে এখন। রেজোয়ান কাজল আরও জানান, নূরা তার স্বপ্নের পথে হেঁটে যে পরিশ্রম করতো এই ফলাফল তার প্রমাণ। এই ফলাফলটা তার আক্ষেপ আরও বাড়িয়ে তুলছে এখনবিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহীন সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষার্থী ছাড়া ফলাফলের কী-বা মূল্য থাকে। এই বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল নূরা। তার এমন ফলাফলই আমাদের কাছে প্রত্যাশিত ছিল। তার স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবে। কিন্তু একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে সবই এখন অতীত। ফলাফলের দিন প্রিয় শিক্ষার্থীর এই ফলাফলটাও বাড়িয়েছে আক্ষেপ ও বিষাদ।
গত ২২ এপ্রিল রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আবদার এলাকায় গফরগাঁও উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী কাজলের স্ত্রী আক্তার ফাতেমা (৪০), তাঁর মেয়ে নূরা আক্তার (১৫), শাওরিন আক্তার (১২) ও ছেলে ফাদিল (৫)কে গলাকেটে হত্যা করা হয়।
দৈনিক বাংলা পত্রিকা / আতাউর রহমান মিন্টু
Facebook Comments