আজ বাংলা ১৪২৭ সনের প্রথম দিন। এমন এক সময় বাঙালি জাতি নতুন একটি বছরে পা দিল যখন চারদিকে সীমাহীন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য নেই দৃশ্যমান কোনো উদযাপন। নেই শোভাযাত্রা, ছায়ানটের পরিবেশনা, মোড়ে মোড়ে পান্তা ইলিশ ভক্ষণ, রংবেরঙের পোশাক পড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ানো, ঢাক-ঢোলের ডঙ্কা। এমন অসংখ্য নেই-এর মধ্যেই দেশবাসী পালন করছে এক অবরুদ্ধ এক নববর্ষ!
তাই বলে কী মুখ গোমড়া করে বসে থাকা যায়? প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা হচ্ছে না তো কী হয়েছে- অনেকেই মোবাইলে খুদেবার্তা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন নববর্ষের। এবার নতুন পোশাক কেনা হয়নি, তাতেও সমস্যা নেই। গত বছরেরটা পরেই ফেসবুকে লাইভে আসছেন অনেকে। নিজের ওয়ালে ছবি জুড়ে দিয়ে বন্ধুদের মতামত চাইছেন কেউ কেউ।
ঐতিহ্যবাহী পান্তা-ইলিশও ভোজনও হয়ে গেছে অনেকের। ফ্রিজে অনেকদিনের রেখে দেওয়া যে ইলিশটি, সেটাই কাজে লাগিয়েছেন। বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হল্লা করে খাওয়া হয়নি ঠিক, তবে এতটুকু উপভোগ করতে দোষ কী!
আফসোস ঝড়ে পড়ছে অনেকের কণ্ঠে, কী প্রাণবন্তই না আমাদের একেকটি নববর্ষ উদযাপন! হাজার হাজার মানুষ হাঁটছে, যেন কোনো তীর্থযাত্রা। রাস্তার ফুটপাথ ঘেষে বাঁশি-খেলনার দোকান, চুড়ি বিক্রেতাদের হাঁকডাক, শাড়ি পরা তরুণীদের খোঁপায় লাগানো ফুল, তরুণদের লাল পাঞ্জাবি। সেসবের কিছুই নেই যেমন সত্য, তেমনি এই দিনে প্রত্যাশা আছে- দ্রুতই দেশ মুক্ত হবে করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে।
এস.এম. সজল/দৈনিক বাংলা পত্রিকা
Facebook Comments